মহান আল্লাহতায়ালা মানুষকে উঁচুনিচু; করে সৃষ্টি করেছেন, সচ্ছলতা ও দরিদ্রতা দিয়ে ‘পরীক্ষা’ ।করেন। যাতে একে অন্যের সহযোগী ও পরিপূরক হয়। ধৈর্য, সহানুভূতি ও মানবতার চর্চা হয়। এসবই স্রষ্টার সৃষ্টি রহস্যের নিদর্শন। ইসলামে পরোপকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। এটা ইমানের দাবি এবং আল্লাহর অত্যন্ত পছন্দনীয় কাজ।
হাদিসে বর্ণিত আছে, ‘যে ব্যক্তি মানুষের বেশি উপকার করে, সে-ই শ্রেষ্ঠ মানুষ।’ এ উপকার করা যায় বিভিন্নভাবে। অর্থ দিয়ে, শক্তি দিয়ে, বুদ্ধি দিয়ে, বিদ্যা দিয়ে। যে খোদাপ্রদত্ত যোগ্যতা মানবসেবায় নিয়োজিত করে, তার যোগ্যতা সার্থক হয় এবং সে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জাহানে সাফল্যমন্ডিত হয়।
আমেরিকার একটি অঙ্গরাজ্যে খ্রিস্টান ভদ্রমহিলার ইসলাম গ্রহণ!
পরোপকার যে পন্থায়ই করা হোক, তা আল্লাহর কাছে কবুল এবং মর্যাদাপূর্ণ সওয়াবের কাজ হিসেবে’ গণ্য হওয়ার জন্য শর্তহলো’ পার্থিব যে কোনো ধরনের উদ্দেশ্য ওস্বার্থহীন ভাবে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে তা করে যাওয়া। অর্থাৎ উপকৃত ব্যক্তির কাছ থেকে কোনো ধরনের বদলা পাওয়া, কিংবা সুনাম সুখ্যাতি লাভ করা, সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন বা অন্য কোনোরকম সুবিধা ভোগ করা।
অথবা দান করে তা খোঁটা দিয়ে কাউকে আঘাত করা বা ছোট করা অথবা দমিয়ে রাখা। আল্লাহ বলেন, আমরা তো তোমাদের খাওয়াই কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে। আমরা তোমাদের কাছে কোনো প্রতিদান চাই না এবং কৃতজ্ঞতাও না। (সুরা দাহার : ৯) কেননা আল্লাহর দেওয়া নেয়ামত নিজের জানমাল মহান আল্লাহর ‘রাস্তায়’ ব্যয়কারীকে জান্নাত দান করা হবেই।
আল্লাহ মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও সম্পদ খরিদ করে নিয়েছেন, তাদের জন্য জান্নাতের বিনিময়ে। (সুরা তওবা : ১১১) প্রিয়নবী (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের দুনিয়াবি সংকটগুলোর কোনো একটি বিমোচন করে দেয়, দয়াময় আল্লাহ তাঁর আখেরাতের সংকটগুলো থেকে একটি মোচন করে দেবেন।
যে ব্যক্তি কোনো অভাবগ্রস্তের অভাব মোচনে সাহায্য করবে, আল্লাহ তার দুনিয়া ও আখেরাতে স্বাচ্ছন্দ্য দান করবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ গোপন করবে, আল্লাহ তাঁর দুনিয়া ও আখেরাতের সব দোষ গোপন করবেন। আল্লাহ বান্দার সাহায্যে থাকেন, যতক্ষণ বান্দা তার ভাই’য়ের সাহায্যে নিয়োজিত’ থাকে।
”মুসলিম”পরোপকারের লাভ কেবল আখেরাতে নয়, দুনিয়ায়ও পাওয়া যায়। তবে তা তখনই, যখন লক্ষ্যবস্তু হয় শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি। যদি কারও উদ্দেশ্য খারাপ হয় এবং উপকৃত ব্যক্তিকে খোঁটা দিয়ে আঘাত করে, খাটো করে, অপমান করে তাহলে সেই ব্যক্তির সব উপকার বিনষ্ট হয়ে যায় এবং সওয়াব থেকে বঞ্চিত হয়।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, যারা নিজ সম্পদ আল্লাহর ”পথে ব্যয়’ করে, আর ব্যয় করার [পর খোঁটা দেয় না] এবং কোনো কষ্ট দেয় না, তারা নিজ প্রতিপালকের কাছে তাদের প্রতিদান পাবে। তাদের কোনো ভয় থাকবে না এবং তারা দুঃখিতও হবে না।
( সুরা বাকারা : ২৬২)
লেখক’খতিব, কাওলার বাজার ‘জামে’ মসজিদ, দক্ষিণখান, ঢাকা।।
আপনার মতামত জানান